ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের ‘খরচাপাতি’র নামে চাঁদাবাজি

AL._1বিশেষ প্রতিবেদক:
জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন ও কাউন্সিলের ‘খরচাপাতি’র নামে চলছে ব্যাপক চাঁদাবাজি।
আবাসিক হোটেল, কটেজ, রাজনীতিবিদ, সামাজিক সংগঠনের নেতা, মুদির দোকান এমনকি পানের দোকান থেকে আদায় করা হচ্ছে নির্দিষ্ট অংকের চাঁদা।
সম্মেলনের নামে সাংবাদিকদেরও বাধ্য করা হচ্ছে চাঁদা দিতে।
হানা দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। অন্যথায় আসছে হুমকি।
কক্সবাজারের সিনিয়র সাংবাদিক তোফায়েল আহমদ অভিযোগ করেন, পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মোরশেদ হোসেন বাবুর নেতৃত্বে হোটেল মোটেল জোনে গণহারে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, শুক্রবার রাত ৯ টায় আওয়ামীলীগ নেতা বাবুর শ্যালক মাহফুজের নেতৃত্বে আতিক, ফরিদ, হেলালসহ ৭/৮ জন লোক আমার কটেজে গিয়ে চাঁদা দাবী করে। কটেজের কর্মচারীরা পরে দেবে জানালে হুমকি দিয়ে বলে ‘এক্ষণই ১০০০ টাকা দিবি।’
সাংবাদি তোফায়েল দুঃখ করে বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আজীবন লালন করে চলছি। বিএনপি-জামায়াতের লোকেরা চাঁদা দাবী করলে মনকে বোঝাতে পারতাম।
আমার মতো মানুষ যেখানে চাঁদাবাজির শিকার সেখানে সাধারণ লোকজনের অবস্থা কোন পর্যায়ে তা সহজেই অনুমেয়।
বিষয়টি আমি জেলা আওয়ামীলীগের নেতারাসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অবগত করেছি।
একই অভিযোগ, কলাতলী এলাকার আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ীদের।
তারা জানায়, আওয়ামীলীগের সম্মেলনের নামে গত তিন ধরে বিভিন্ন হোটেল মালিকদের চাঁদা দিতে বাধ্য করছে। চাঁদা না দিলে ‘পরিণতি ভাল হবেনা’ বলেও হুমকি দেয়া হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত ১২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মোরশেদ হোসেন বাবু বলেন, আমি কারো কাছে চাঁদা খোঁজিনি। আমার নামেও কেউ চাঁদাবাজি করছে না।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি বলেন, আমরা নিজেরাই তো টাকা দিয়ে সম্মেলনের আয়োজন করছি। সম্মেলনের নামে চাঁদাবাজির কোন সুযোগ নেই।
একই বিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ্যডভোকেট একে আমহমদ হোসেন বলেন, আওয়ামীলীগের সম্মেলনের নামে চাঁদাবাজি হওয়ার কথা খুবই দুঃখজনক।
তিনি বলেন, তিন এমপির কাছে ৩ লাখ এবং আমরা নিজেরা ৫০ হাজার টাকা হারে চাঁদা দিয়েছি। বাইরের কারো কাছ থেকে চাঁদা নেয়ার সুযোগ নেই।
চাঁদাবাজির বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, চাঁদাবাজদের বিষয়ে প্রশাসন কড়া অবস্থানে। আওয়ামীলীগের সম্মেলনের নামে সাধারণ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
৩১ জানুয়ারী রবিবার সকাল দশটায় শহরের পাবলিক লাইব্রেরীর শহীদ দৌলত ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল।
এতে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমপি। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশারফ হোসেন এমপি। প্রধান বক্তা হিসাবে দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এমপি উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া ডজনখানেক আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতা সম্মেলনে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। জেলা আওয়ামীলীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৩ সালের ২০ ডিসেম্বর।

পাঠকের মতামত: